বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৫৮ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

তৃতীয় মেয়াদে শি চিনপিং, বিশ্বশান্তির প্রতীক হবেন?

শি চিনপিং

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

বিশ্বের মানুষ যখন শান্তি কামনা ও ইউক্রেন যুদ্ধের অবিলম্বে অবসান চাচ্ছে, সেই সময়ে সপ্তাহব্যাপী ২০তম জাতীয় কংগ্রেসে দেওয়া বক্তব্যে চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং শিগগিরই বিশ্বে হুমকি ও ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা থেকে মুক্তির আশা উড়িয়ে দিয়েছেন। অন্তত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তির আশা করা যায় না; কারণ শি জিনপিং তার বক্তৃতায় চীনের মূল স্বার্থ রক্ষা, সামরিক সক্ষমতা বাড়ানো এবং তাইওয়ানকে একত্রীকরণে শক্তি পরিহার না করার ওপর জোর দিয়েছেন।

হংকং পোস্টে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী পাঁচ বছরে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে সামরিক শক্তি দেখাবে চীন; যেখানে তাইওয়ানকে একীভূত করার চেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যাবে এবং দুই দেশের মধ্যে সম্ভাব্য যুদ্ধের সূত্রপাত ঘটাবে।

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে খাদ্য ও জ্বালানি সংকটে বিশ্ব যখন মন্দার কবলে পড়ছে, ঠিক তখন শি চিনপিংয়ের এমন বক্তব্য যেন অনেকটা বিনা মেঘে বজ্রপাত। তবে বাস্তবতা হলো, যুক্তরাষ্ট্রের পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম সামরিক বরাদ্দের দেশ চীন প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি বৃদ্ধি করছে। ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার সক্ষমতা প্রসারিত করার চেষ্টা করছে, আরও দুটি বিমানবাহী রণতরী নির্মাণ করছে (বর্তমানে চীনের তিনটি বিমানবাহী রণতরী রয়েছে)।

আফ্রিকার গরিব দেশ জিবুতিতে বর্তমানে চীনের সামরিক ঘাঁটি রয়েছে এবং কম্বোডিয়া ও কিরিবাতির মতো দেশে গোপনে নতুন করে সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করছে। সলোমন দ্বীপপুঞ্জের সঙ্গে একটি নিরাপত্তা চুক্তি করেছে চীন, যার আওতায় চীনা প্রকল্প ও কর্মকর্তাদের সুরক্ষায় নিজস্ব সেনা মোতায়েন করবে দেশটি।

চীন তার সশস্ত্র বাহিনীর পেশাগত প্রশিক্ষণেও বড় ধরনের বিনিয়োগ করছে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে সম্প্রতি দাবি করা হয়েছে, সাবেক ব্রিটিশ সামরিক পাইলটদের বিপুল অর্থের বিনিময়ে চীনের সশস্ত্র বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য প্রলুব্ধ করা হচ্ছে। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ধারণা করা হচ্ছে, ৩০ জনের মতো অবসরপ্রাপ্ত ব্রিটিশ সামরিক পাইলট চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির সদস্যদের প্রশিক্ষণের জন্য চীন গেছেন। এই পাইলটরা অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান পরিচালনায় অভিজ্ঞ। এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলছেন, এ ঘটনায় ব্রিটেন উদ্বিগ্ন, কারণ এটি তার জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকির কারণ হতে পারে।

ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, নিয়োগপ্রাপ্ত ব্রিটিশ পাইলটদের মধ্যে রয়্যাল এয়ারফোর্স এবং সশস্ত্র বাহিনীর অন্যান্য শাখার সাবেক সদস্যও রয়েছেন। তবে ব্রিটেন বলেছে, তারা এটি বন্ধ করতে মিত্রদের সঙ্গে কাজ করছে।

ব্রিটিশ কর্মকর্তারা বলছেন, চীনের সামরিক বাহিনীকে প্রশিক্ষণের ব্যাপারে করোনভাইরাস মহামারি শুরুর আগেই কথা হচ্ছিল, কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সেই আলোচনা গতি পেয়েছে। ব্রিটিশ পাইলটদের নিয়োগের বিষয়টি করোনাভাইরাসের মধ্যে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কারণে স্থবির ছিল; সে সময় থেকেই পাইলটদের ব্যাপকভাবে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করছে চীন।

চীনের নেতারা জানেন, শুধু জাতীয় আবেগ জাগিয়ে তারা দেশের মানুষের ক্রমবর্ধমান হতাশা কাটিয়ে উঠতে পারবেন। এ প্রসঙ্গে একাধিক বিশেষজ্ঞ ভবিষ্যদ্বাণী করছেন, চীনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শি চিনপিংয়ের তৃতীয় মেয়াদ পূর্ব এশিয়ার দেশ ও বিশ্বের জন্য চ্যালেঞ্জপূর্ণ হতে পারে। অদূর ভবিষ্যতে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল যুদ্ধক্ষেত্র হয়ে ওঠার শঙ্কা রয়েছে।

ভয়েস/জেইউ।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION